the female assassin

the ashtray was looking more and more like a sick hedgehog   and her yellowed fingers added one more quill to it   she sat back in her chair   work wasn’t in the best of stages lately and her office looked like a junkie’s trailer. You could scrape the nicotine off the walls. In fact, she would get nicotine under her nails if she just scratched her skin anywhere   But otherwise she was a beauty and that was a problem. Beautiful women have the worst luck in marriages   The husband left and the two girls went with him They were sick and tired of her habit to consume more cigarette smoke than oxygen   And drinking was also a problem though not nearly as big   The worst drinking has ever done to her was to make her lose the driving license which she never bothered to take back   The real problem was, as always, a lack of money. If the damn phone didn’t ring soon she would have to kill someone for a pack of cigarettes   Assuming she could still kill someone with her body rotting from the inside. She was fine with breast cancer but now lung cancer joined too and it was by far nastier   Still that was all right It doesn’t take a healthy body to pull a trigger   And speaking of triggers She opened a drawer in her desk took out the gun studied it   Not loaded   She browsed through the drawer   Only one bullet left. One single bullet. These things cost money too   Damn it   But it’s like they said back in the mercenary camp The last bullet is always preserved to be used on the self   She loaded the bullet into the gun   A life lived well is one lived without regrets and without ever asking for mercy or feeling sorry for yourself   At 39 she had that. There was nothing else to be taken away from it   She put the gun to her temple   Smiled   “Except for a final smoke.”

the female assassin

কফিশপে বসে ‘অফিস’ করা কেন ভালো

ধরুন, আপনি একটা কফিশপে বসে আছেন। কফির ঘ্রাণে চারদিক ম–ম করছে। কখনো কফির কাপ আর চামচের টুংটাং, কখনো পাশের টেবিল থেকে কারও চাপা হাসির শব্দ কানে আসছে। গবেষণা বলছে, এমন পরিবেশ মানুষের কর্মক্ষমতা ও সৃজনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে। কেননা বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য কফিশপের আছে, যা বাসায় বা অফিসে পাওয়া যায় না।

করোনাকালে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ কথাটির ব্যাপক প্রচলন হওয়ার আগে থেকেই কিন্তু ‘ওয়ার্ক ফ্রম কফিশপ’ ব্যাপারটা চালু আছে। অফিসে না গিয়েও যে অফিস করা যায়, ২০২০ সালেই তা প্রমাণ হয়ে গেছে। আর আমাদের প্রশিক্ষণও হয়ে গেছে। অতএব সামনের দিনগুলোতে ‘ওয়ার্ক ফ্রম কফিশপ’–এর ধারণা আরও জনপ্রিয়তা পেতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, কফিশপের কোলাহল, ঘ্রাণ এবং দৃশ্যের পরিবর্তন আমাদের সৃজনশীল ভাবনায় সাহায্য করে।

২০১২ সালে জার্নাল অব কনজিউমার রিসার্চে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা যায়, কফিশপে সাধারণত নিচু থেকে মাঝারি স্তরের একধরনের কোলাহল থাকে। শব্দের এই মাত্রা আপনাকে পুরোপুরি কাজে মনোনিবেশ করতে দেবে, তা নয়; বরং কখনো কখনো কিছুটা অন্যমনস্ক করে দেবে। এটিই ভিন্নধর্মী চিন্তা ও সৃজনশীল আইডিয়ার জন্য সহায়ক। একই ধরনের ফলাফল পাওয়া গেছে ২০১৯ সালে করা আরেকটি গবেষণায়—কফিশপের শব্দের মাত্রা আমাদের ইন্দ্রিয়কে সজাগ রাখার ক্ষেত্রে খুবই কার্যকর। এমনকি ইদানীং কর্মীদের কর্মক্ষমতা বাড়াতে অনেক প্রতিষ্ঠান অফিসের ভেতরে কফিশপের মতো পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে। একে বলা হচ্ছে ‘দ্য কফিশপ ইফেক্ট’।

কফিশপের কোলাহল, ঘ্রাণ এবং দৃশ্যের পরিবর্তন সৃজনশীল ভাবনায় সাহায্য করে

যদি এমন হয় যে কফিশপে আপনি ছাড়া অন্য যাঁরা উপস্থিত আছেন, তাঁরাও আপনার মতো কাজ করতে এসেছেন, তাহলে কর্মক্ষমতা বেড়ে যাবে আরও। যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার কার্নেগি মেলন ইউনিভার্সিটির অর্গানাইজেশনাল থিওরি অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সানকি লি বলেন, ‘ব্যাপারটা অনেকটা শরীরচর্চা করতে জিমে যাওয়ার মতো। জিমে গিয়ে আপনি যখন আরও অনেককে ব্যায়াম করতে দেখবেন, তখন আপনিও গড়িমসি না করে শরীরচর্চা শুরু করতে উদ্বুদ্ধ হবেন।’

বাসায় কিংবা অফিসে আমরা সাধারণত একই পরিবেশে দীর্ঘক্ষণ কাজ করি। কিন্তু কফিশপের সুবিধা হলো, এখানে দৃশ্যপটে বৈচিত্র্য আছে। নানা ধরনের মানুষ আসবে, যাবে। যদি একেক দিন একেক কফিশপে বসে কাজ করেন, তাতেও আপনি বৈচিত্র্য খুঁজে পাবেন। সানকি লি বলেন, ‘একটা অফিস কীভাবে সাজানো হলো, তার ওপরও সৃজনশীলতা নির্ভর করে। একে বলা হয় একমুখী সৃজনশীল চিন্তা। যদি দৃশ্যপটের পরিবর্তন হয়, তা আপনাকে যেকোনো সমস্যার সন্তোষজনক ও ভিন্নধর্মী সমাধান পেতে সাহায্য করবে।’

ইদানীং কর্মীদের কর্মক্ষমতা বাড়াতে অনেক প্রতিষ্ঠান অফিসের ভেতরে কফিশপের মতো পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে

কফিশপে কাজের উপকারিতা নিয়ে গবেষণা করেছেন নিউইয়র্কের ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক করিডন স্মিথও। তাঁর মতে, অফিসের সাধারণ সভা কিংবা জুমের মতো অনলাইন মাধ্যমে সবাই এক হয়ে আলোচনা করার মধ্যে একধরনের ‘আনুষ্ঠানিকতা’ আছে। অন্যদিকে ক্যাফে বা কফিশপের আলোচনা কিছুটা অনানুষ্ঠানিক। এটিও সৃজনশীল চিন্তা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে মানুষকে সহায়তা করে।

এত সব যুক্তি উপস্থাপনের পর গবেষকেরা বলছেন সবচেয়ে কার্যকর উপাদানটির কথা, যে কারণে লোকে কফিশপে যায়—কফি! ধোঁয়া–ওঠা এক কাপ কফি যদি থাকে সামনে, কাজের ফাঁকে ফাঁকে একটু চুমুক দিতে পারলে নিশ্চয়ই তা আপনাকে চাঙা রাখবে।

মূল প্রবন্ধ বিবিসি।

[ দৈনিক প্রথম আলো,  ৩০ জানুয়ারি ২০২১ ]

চেয়ারম্যান-নামা

হাজারো অনিয়মের মধ্যে থাকতে থাকতে আমরা অনিয়মেই অভ্যস্ত হয়ে গেছি। বরঞ্চ কোথাও কোন প্রতিবাদ -প্রতিরোধের কথা শুনলেই আমরা বিস্মিত হই। প্রতিবাদীকে “মাথা গরম” আখ্যা দিয়ে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করি — তারই এই কাজ (প্রতিবাদ করা) উচিত হয়নি। এরই ধারাবাহিকতায় “সরকারের মাথা” গদীনসীন মন্ত্রীও ঘুষকে বলেন Speed money.

করোনা আমাদের এই ঘুনে ধরা সমাজ ব্যবস্থাকে উলংগ করে দিয়েছে। যেহেতু করোনার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত – সেহেতু স্বাস্থ্য সেক্টরের দূর্নীতি -অব্যবস্থাপনা বেশী দৃশ্যমান। মিঃ শাহেদ অফিসিয়ালি ধরা পড়েছেন। ব্যস আমরা সব ভুলে সে কিভাবে ধরা পড়লো? কেন ধরা পড়লো? আজকেই কি ধরা পড়লো?- এসব আলোচনায় ব্যস্ত। তার আগের কয়েকদিন ছিলাম ডাঃ সাবরিনার ব্যক্তি জীবন নিয়ে।

ব্যক্তি পরিচয় যাই হোক, একজন অপরাধীর পরিচয় অপরাধী- সে সমাজের অস্পৃশ্য। কিন্তু আমরা দেখি উল্টো — এখানেও আসে রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি। অপরাধীকে ব্যক্তি হিসেবে না দেখে আমরা দেখি এইসব নীতির আলোকে। ফলে অপরাধীরা বারবার পার পেয়ে যায়, হয়ে উঠে আরো বেপরোয়া। তারই জ্বলন্ত প্রমাণ আজকের মিঃ শাহেদ।

পূর্বের কৃত হাজারো অপরাধের শাস্তি না পাওয়ার ফল আজকের বেপরোয়া, লাগামহীন অপরাধী শাহেদ। এক শাহেদ- সাবরিনার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের “স্বর্গরাজ্য” এ আজ তোলপাড়। মন্ত্রী -সচিব- ডিজিসহ কর্মকর্তাবৃন্দ একজন আরেকজনকে দোষ দিচ্ছেন। কিন্তু উনারা প্রত্যেকেই কি দায়ী নন? রিজেন্টের সাথে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চুক্তির সময় শুধু স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যসচিব নন— এর সাথে সংশ্লিষ্টতা নেই, এমন মন্ত্রণালয়ের সচিবরা কেন গিয়েছিলেন? এর ব্যাখ্যা কি পাওয়া গেছে?

যেসময়ে বড় বড় সরকারী -বেসরকারী হাসপাতাল করোনা পরীক্ষা বা নমুনা সংগ্রহের অনুমতি পায়নি, সেসময়ে করোনার নমুনা সংগ্রহ (ধরলাম নমুনা সংগ্রহই) এর জন্য কেন অখ্যাত মিঃ আরিফ- ডাঃ সাবরিনার এনজিওকে অনুমোদন দেয়া হলো? এদের দূর্নীতিতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের যে ক্ষতি হয়েছে– তার দায় কে নিবে?

বলা হচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঠিকাদার -সাপ্লাইয়ার মিঃ মিঠুর কথা। পত্রিকার নিউজ – স্বাস্থ্য খাতে উনি অনেক দূর্নীতি করেছেন, নিম্নমানের মাল দিয়েছেন, এমন কি কোটি কোটি টাকা দামের এম আর আই মেশিনের নামে খালি বাক্স সাপ্লাই দিয়েছেন। আচ্ছা মিঃ মিঠু কি কারো সাইন নকল করেছিলেন? চেক জালিয়াতির মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের টাকা উঠিয়েছেন? “মিঠু সিন্ডিকেট” না বলে খোঁজ করুন – কার স্বাক্ষরে তার এসব কাজ অনুমোদন পেয়েছে? কার স্বাক্ষরে এইসব তথাকথিত নিম্নমানের মাল রিসিভ করা হয়েছে? তাদেরকে জেরা করুন – থলের বেড়াল বের হয়ে যাবে।

আমরা বিষাক্ত মালের ফেরিওয়ালা /হকারের পিছনে লাগি। দৈব-দুর্বিপাকে দু-একজন অসহনীয় হয়ে গেলে তার ত্রাণকর্তা তাকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। কিন্তু বিষাক্ত মালের উৎপাদনকারী/ বাজারজাতকারীকে ভয়ে হোক বা স্বার্থের জন্য হোক আমরা কিছু বলি না/বলতে পারি না। এখানে মিডিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু হায়…….

ধরা পড়ার পর মিঃ শাহেদের সর্বশেষ ক্ষেদোক্তি: “নৌকা করে পালাতে গিয়ে ধরা পড়লাম। আমার যদি নিজস্ব প্লেন থাকতো আর শুভাকাঙ্ক্ষীরা বেঈমানী না করতো — তাহলে আজ আমি ব্যাংকক বা সিংগাপুর থাকতাম!” উনি কি মিথ্যা বলেছেন?

কিন্তু আমাদের ব্যাংকক বা সিংগাপুর যাওয়ার সামর্থ্য নাই, ইচ্ছাও নাই। এদেশ মাতৃভূমিই আমাদের ভরসা। আসুন সবাই যার যার অবস্থান থেকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হই —- অন্যায়কারীর দলীয় পরিচয় না খুঁজি। মনে রাখতে পারলে ভাল, লাইসেন্সবিহীন গাড়ীচালকের কাছে শুধু আমি নই, আপনিও নিরাপদ নন।

সামাজিক অবস্থান অনুযায়ী শব্দের ব্যবহার

সামাজিক অবস্থান অনুযায়ী শব্দের ব্যবহারঃ

গরীব – বিস্কুট
মধ্যবিত্ত – বিস্কিট
বড়লোক – কুকিজ

গরীব – লাইন করে
মধ্যবিত্ত – প্রেম করে
বড়লোক – রিলেশনশিপ করে

গরীব – বিয়া করছে
মধ্যবিত্ত – বিবাহ করেছে
বড়লোক – গট ম্যারিড

গরীব – চুক্কা
মধ্যবিত্ত – আচার
বড়লোক- চাটনী

খুব গরীব – বাজান
গরীব – আব্বা
মধ্যবিত্ত – বাবা
বড়লোক – ড্যাডি

গরীব – হ্যালু ক্যাডা
মধ্যবিত্ত- হ্যালো কে
ধনী – ইয়েস স্পিকিং

খুব গরীব – প্যাট হয়ছে
গরীব – পোয়াতি
মধ্যবিত্ত – প্রেগনেন্ট, গর্ভবতী
বড়লোক – কনসিভ করেছে

গরীব- আফা
মধ্যবিত্ত – আপু
বড়লোক – সিস

গরীব – মাল খায়
মধ্যবিত্ত – মদ খায়
বড়লোক – ড্রিঙ্ক করে

গরীব – ধুর বা*
মধ্যবিত্ত – ধুস শালা
ধনী – ওহ্ শিট

গরীব – তালাক
মধ্যবিত্ত – স্বামী পরিত্যাক্তা
বড়লোক – শর্ট ডিভোর্সি
খুব বড়লোক- নারীবাদী

খুব গরীব – পাইখানা
গরীব – ল্যাট্রিন
মধ্যবিত্ত – টয়লেট
বড়লোক – ওয়াশরুম

খুব গরীব – ডুব
গরীব – স্নান
মধ্যবিত্ত- গোসল
বড়লোক – শাওয়ার

গরীব – কামলা খাটি
মধ্যবিত্ত – চাকরি করি
বড়লোক – জব করি

গরীব – লাং
মধ্যবিত্ত -প্রেমিক
বড়লোক -পার্টনার

খুব গরীব – ভাতার
গরীব – স্বামী
মধ্যবিত্ত – হাজবেন্ড
বড়লোক- লাইফ পার্টনার


গরীব ও মধ্যবিত্ত – মুড়ী
বড়লোক – Puffed Rice

Light of Hope — আশার বাণী

মানব জীবনকে দুর্বিসহ পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিয়েছে করোনাভাইরাস। এই মহামারির আতঙ্কে এখন সারা বিশ্ব। তবে এই মহামারির সমাপ্তি সন্নিকটে বলে মন্তব্য করেছেন নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী মাইকেল লেভিট। তিনি বলেন, ধীরে ধীরে এই করোনাভাইরাস দুর্বল হয়ে পড়বে।

রসায়নে ২০১৩ সালে নোবেলজয়ী মাইকেল লেভিট একজন জীব পদার্থ বিজ্ঞানী। ফেব্রুয়ারিতেই তিনি করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমে আসার লক্ষণের কথা জানিয়েছিলেন। যা চীনে সত্য বলে প্রমাণিত হয়।

মাইকেল লেভিট ইসরায়েলের বাণিজ্যবিষয়ক পত্রিকা ক্যালকালিস্টকে একটি সাক্ষাৎকার দেন। যা ১৩ মার্চ অনলাইনে প্রকাশিত হয়। লেভিট বর্তমানে ইসরায়েলের তেল-আবিবে বসবাস করছেন। তার ফ্লু জাতীয় সমস্যা দেখা দেওয়ায় ফোনে ওই সাক্ষাৎকার নেয়া হয়।

তার স্ত্রী সসান ব্রস চীনা শিল্পের একজন গবেষক। দেশটিতে করোনা ছড়িয়ে পড়ার সময় তিনি চীনের বন্ধুদের কাছে বিষয়টি জানতে চান।

মাইকেল লেভিট জানান, তারা যখন তাদের পরিস্থিতির ভয়াবহতা বর্ণনা করলেন, তখন আমি বিষয়টি গভীরভাবে ভেবে দেখলাম। আমি আশাবাদী হওয়া যায় এমন কিছু খুঁজতে লাগলাম। হুবেই প্রদেশে যখন দিনে ৩০ ভাগ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছিল তখন তা ছিল খুব আতঙ্কজনক পরিসংখ্যান। এই হারে চলতে থাকলে ৯০ দিনে গোটা পৃথিবীর মানুষ তাতে আক্রান্ত হতো। আমি একজন ইনফ্লুয়েঞ্জা বিশেষজ্ঞ নই। কিন্তু আমি সংখ্যা ও তার বৃদ্ধি বিশ্লেষণ করতে পারি।

লেভিট জানান, ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ তিনি দেখেন সেখানে ১৮০০ নতুন রোগী রয়েছে। ষষ্ঠ দিনে তা ৪৭০০ তে পৌঁছায়। কিন্তু ফেব্রুয়ারির ৭ তারিখে এসে নতুনভাবে আক্রান্তের সংখ্যা কমতে থাকে এবং তা অব্যাহত ছিল। আরো এক সপ্তাহ পর উল্লেখযোগ্যভাবে কমতে থাকে মৃতের সংখ্যাও। আক্রান্তের পরিসংখ্যানের এই নাটকীয় পরিবর্তনের একটি মধ্য বিন্দু পাওয়া যায় যা থেকে এই মহামারির পরিসমাপ্তির একটা আশা করা যায়। আমি তখন এই উপসংহারে পৌঁছাই যে চীনে দু সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে, এখন সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা আরো কমে আসছে।

লেভিট এর ব্যাখ্যায় বলেন, যদি কোনো ব্যক্তি ব্যাংকে তার জমা দেওয়া অর্থের বিপরীতে প্রথম দিন ৩০ শতাংশ সুদ পান, আর দ্বিতীয় দিন পান ২৯ শতাংশ, তাহলেই বুঝতে পারা যায় যে ওই ব্যক্তি শেষ পর্যন্ত খুব বেশি পাবেন না।

লেভিটের এই বক্তব্য দ্রুতই চীনা ভাষায় তার বন্ধুরা অনুবাদ করে ছড়িয়ে দেন। তার বক্তব্য তখন চীনের মানুষের মনে আশা জাগায়। তার বক্তব্যের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় রাতারাতি তিনি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন সেখানে। চীনের বিভিন্ন মাধ্যমে এরপর তার সাক্ষাৎকারও প্রকাশিত হয়। তিনি বলেন, মার্চের শেষে চীন থেকে এ ভাইরাস নির্মূল হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে লেভিট আরো বলেন, চীনে শুরুতে প্রত্যেক কভিড-১৯ রোগী দিনে দুই দশমিক দুজনকে আক্রান্ত করেছে। এই উচ্চমাত্রার সংক্রমণ বড় বিপর্যয়ের দিকেই নিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু যখন আক্রান্তের হার কমতে থাকল, এবং এখন দিনে আক্রান্তের সংখ্যা শূন্যের কাছাকাছি।

তিনি ব্যাংকের উদাহরণ টেনে আবার বলেন, যদি সুদ কমতে থাকে, তখনো কিন্তু টাকা উপার্জন অব্যাহত থাকবে। যে আসল জমা ছিল তা কিন্তু কমবে না। এতে সুদের জোগান যোগ হবে খুব ধীরে। রোগের ক্ষেত্রেও এ পরিসংখ্যান আলাপ করা যায়, কারণ মানুষ তখন প্রতিদিনের নতুন নতুন আক্রান্তের খবরে খুব আতঙ্কে থাকে। অথচ প্রকৃত চিত্র হচ্ছে আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসা মানে এর বিস্তৃতি এক দিন নাই হয়ে যাবে।

লেভিট যুক্তি দেখিয়ে বলেন, ক্রমবর্ধমান মডেল অনুযায়ী আপনি ভেবে থাকেন যে নতুন লোক প্রতিদিনই আক্রান্ত হবে, কারণ আপনি প্রতিদিনই নতুন মানুষের সঙ্গে দেখা করছেন। কিন্তু যদি আপনি নিজের সামাজিক পরিসর চিন্তা করে দেখেন, আপনার আসলে প্রতিদিন একই মানুষদের সঙ্গে মূলত দেখা হয়। আপনার নতুন মানুষদের সঙ্গে দেখা হয় ধরা যাক পরিবহনে। কিন্তু বাসেও (পরিবহনে) কিছুদিন পর দেখা যাবে হয় সব যাত্রী আক্রান্ত অথবা তারা সেরে উঠেছেন।

আরো একটি কারণ দেখিয়ে তিনি বলেন, আপনি সব সময় সবাইকে জড়িয়ে ধরেন না। এ ছাড়া আপনি যার একটু ঠান্ডা লেগেছে তাকে এড়িয়ে চলবেন- যা আমরা এখন করছি। যত অসুস্থতা দেখা যাবে তত সংক্রমণ এড়াতে আপনি সচেতন হবেন। এভাবে প্রতি তিন দিনে একজন ব্যক্তি দেড়জনকে আক্রান্ত করতে পারবে, যা ক্রমে আরো কমে আসবে।

তিনি আরো যোগ করে বলেন, আমরা জানি চীন প্রায় পুরোটাই কোয়ারেন্টাইনে ছিল, মানুষ শুধু জরুরি কেনাকাটা করতে বের হয়েছে এবং অন্যকে এড়িয়ে চলেছে। উহানে, যেখানকার হুবেই তে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ধরা পড়ে, সেখানে সবার আক্রান্ত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু আক্রান্ত হয়েছে মাত্র ৩ শতাংশ। প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেস এ করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়নি।

এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, অনেক মানুষের শরীরই এই রোগ প্রতিরোধের জন্য উপযুক্ত ছিল।

তবে ইতালির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইতালিতে সামাজিক সম্পর্ক খুব উষ্ণ, তাদের খুব সমৃদ্ধ সামাজিক ইতিহাস আছে। যে কারণে, যিনি আক্রান্ত হবেন তাকে সুস্থদের থেকে দূরে রাখতে হবে।

তবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণের বৈশ্বিক পরিসংখ্যান নিয়ে ধারণা দিতেও অস্বীকৃতি জানান লেভিট।

সময় কাজে লাগান!

 

শেষ কবে পছন্দের কবিতাটি আনমনে আওড়েছেন? শৈশবের ফেলে আসা বাড়ির ছাদ, ঘুলঘুলি, বাড়ির সামনে এক চিলতে মাঠে ছুটোছুটির কথা একসময়ের প্রিয় বন্ধুকে ফোনে বলেছেন? ভালোবেসে একদা যাঁকে ঘরে তুলেছেন, সেই প্রিয়তমার সঙ্গে মনখুলে কথা বলা হয় না কত দিন? এখন কিন্তু এসব অপূর্ণতা পূরণের একটা সময় এসে গেছে। পেছনের কারণটা কিন্তু করোনাভাইরাস। তা এ ভাইরাসকে যত অভিশাপই দিন না কেন, ঘরে থাকার সময়টা এরই কারণে। এটাই কিন্তু নিজের মতো করে সময় কাটানোর সুবর্ণ সুযোগ।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকেরা বলছেন, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে একমাত্র যখন ঘরে থাকাই হলো বড় প্রতিরোধ যুদ্ধ, তখন আপনি ভেঙে পড়বেন না, নিঃসঙ্গতা অনুভব করবেন না। বরং ভয়াবহ ব্যস্ততার বাস্তবতায় অথবা ওপরে ওঠার মোহের কারণে সময় না দিতে পারায় যেসব সম্পর্ক একটু একটু করে আলগা হতে হতে প্রায় ছুটে যাওয়ার জোগাড় হয়েছিল, এই মহামারি বরং সেই সম্পর্কগুলো ফের জোড়া লাগার একটা সুযোগ করে দিয়েছে।

ঘরে বসে থেকে এ সময়টা কাজে লাগানোর ব্যাপারে তাঁরা পরামর্শ দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ ও যৌনস্বাস্থ্য বিভাগের চেয়ারম্যান সালাহ্‌উদ্দিন কাউসার বিপ্লব প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘এই মহামারির সময় যখন বাড়িতে বসে বসে সময় কাটাচ্ছেন, তখন এটিকে দারুণভাবে নিজেকে ফিরে পাওয়ার কাজে লাগান। মহামারি একদিন ঠিকই চলে যাবে। দেখবেন, এরপর নিজেকে নতুন করে খুঁজে পেয়েছেন আপনি।’

তিনটি জিনিস পালনে ডব্লিউএইচওর পরামর্শ
বাসায় যাঁরা ঘরবন্দী জীবন যাপন করছেন, এমন মানুষদের বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। সেই নির্দেশিকায় তিনটি নিয়ম মেনে চলতে অনুরোধ করা হয়েছে। এগুলো হলো—এক. উদ্বেগ এড়াতে সারাক্ষণ করোনা বিষয়ের খবর দেখা বন্ধ রাখতে হবে; দুই. করোনা থেকে কীভাবে নিজেকে সুস্থ রাখা যাবে, এ ব্যাপারে তথ্য জোগাড় করার দিকে জোর দিতে হবে এবং একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।

নির্ভরযোগ্য সোর্স থেকে তথ্য নিন
করোনাভাইরাস–সংক্রান্ত তথ্য পেতে সব সময় খোঁজাখুঁজি করতে বারণ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্বাসযোগ্য মাধ্যমের বাইরে তথ্য সংগ্রহ না করার জন্য অনুরোধ করেছেন তাঁরা। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া তথ্যগুলো খতিয়ে দেখা সম্ভব হয় না অনেক সময়। ফলে যাচাইহীন এসব অনুমাননির্ভর তথ্য মানুষের মধ্যে সংক্রমণের ভয় আরও বাড়িয়ে দেয়।

রাজধানীর জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের চাইল্ড এডোলেসেন্ট ও ফ্যামিলি সাইকিয়াট্রি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোয় এক লেখা নিবন্ধে বলেছেন, ‘কেবল বিশ্বাসযোগ্য সূত্র থেকে পাওয়া সঠিক তথ্যের ওপর ভরসা রাখুন। করোনার সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে সাহায্যকারী এবং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধিসংক্রান্ত তথ্যসমূহ নিজে জানুন আর পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে রাখুন। তথ্যের জন্য কেবল নির্ভরযোগ্য বিজ্ঞানসম্মত উৎস, যেমন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় বা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের (সিডিসি) ওয়েবসাইট, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বা সরকার থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা বিশেষজ্ঞের ওপর আস্থা রাখুন।’

পরিবারকে সময় দিন
ঢাকায় একটি বিদেশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় চাকরি করেন মুশফিক আহমেদ (ছদ্মনাম)। প্রায় বিদেশে যেতে হয়, দেশে থাকলে সারা দিন ব্যস্ততা। সাত বছর প্রেম করে বিয়ে করার পর থেকেই প্রেম ফিকে হয়ে আসছিল। করোনার কারণে মুশফিকের বিদেশ যাওয়া বন্ধ। আর এখন বাসার বাইরে যাওয়া বন্ধ। বহুদিন পরে স্ত্রীকে সময় দিচ্ছেন। পুরোনো ছবির অ্যালবাম যেন স্মৃতির জানালা, একটার পর একটা পাতা ওল্টাচ্ছেন আর মনে পড়ে যাচ্ছে রাঙতায় মোড়ানো অদ্ভুত সব সুন্দর দিনের কথা।

প্রথম আলোকে মুশফিক বলেন, ‘ওপরে ওঠার মোহ ও অফিসের চাপ—সব মিলিয়ে সম্পর্কটা যেন সুতার ওপর ঝুলছিল। আমরা নিজেদের কাছে ফিরতে পেরেছি। এই মহামারি একদিন চলে যাবে। আমরা দুজন দুজনকে নতুন করে আবার আবিষ্কার করতে পারব।’ শুধু স্ত্রী নয়, সন্তান, মা–বাবা বা পরিবারের সদস্যদের সময় দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশনাল ও কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান মাহজাবীন হক বলেন, ‘জীবনে অনেক পরিবর্তন ঘটে। এগুলো ইতিবাচকভাবে দেখে তা থেকে ভালোটা নেওয়াই হলো বুদ্ধিমান মানুষের কাজ। এখন ঘরে বসে থাকার সময়, স্ত্রী, সন্তান, মা-বাবা, ভাই-বোনকে সময় দিন। তাদের সঙ্গে গল্প করুন। অতিতে কী কী ভুল হয়েছে তা মনে করুন। সম্পর্কগুলো ঝালাই করে নিন। এতে আগামী দিনগুলোয় সুখী জীবন ও সহজ জীবনযাপনে সহায়ক হবে।’

এ সময় নতুন নতুন রান্নার কোন ধরনের পদ করা যায়, তা পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। এতে সময় যেমন ভালো কাটবে, তেমনি পরিবারের মানুষের কষ্টও কিছুটা কমবে। কারণ, অধিকাংশ বাড়িতে কাজের বুয়াকে ছাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

নিজের অভিজ্ঞতা বিনিময় করুন
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণবিষয়ক সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে বলছেন। তিনি কীভাবে, কোথা থেকে আক্রান্ত হয়েছেন, কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন, এসব সত্যিকার পূর্ণাঙ্গ তথ্য থাকলে যাঁরা এখনো আক্রান্ত হননি, তাঁদের জন্য এই তথ্য খুব উপকারে আসবে বলে মনে করছে সিডিসি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু আক্রান্ত ব্যক্তিরাই নন, যাঁরা বাসাবাড়িতে গৃহবন্দী হিসেবে সময় কাটাচ্ছেন, তাঁরা এই সময়কার মুহূর্তগুলো লিখে রাখতে পারেন। সেগুলো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে শেয়ার করতে পারেন। এতে যাঁরা ঘরে রয়েছেন, তাঁরা একে অন্যর অভিজ্ঞতা, চিন্তার সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন।

ঘরের মধ্যে ব্যায়াম করুন
যাঁরা নিয়মিত হাঁটতেন বা ব্যায়াম করতেন, প্রাণঘাতী ভাইরাসের কারণে সেসব বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু চিকিৎসকেরা বলছেন, ঘরের মধ্যেই ব্যায়াম করতে হবে। এটি ছেড়ে দেওয়া যাবে না। ব্রিটিশভিত্তিক গণমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, দক্ষিণ স্পেনের একজন শরীরচর্চাবিদ তাঁর বাসভবনের মাঝখানের খোলা জায়গায় নিয়মিত ব্যায়ামের ক্লাস করাচ্ছেন। সেটি দেখে ওই ভবনের অন্যরা নিজের বাসার ব্যালকনিতে ব্যায়াম করছেন।

এ সময় শুধু নিজে ব্যায়াম না, পরিবারের অন্য সদস্যদেরও ব্যায়াম করার ব্যাপারে উৎসাহ দিতে হবে। এ বিষয়ে হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিভিন্ন মাধ্যমে এখন উড়ছে অতিপ্রচার, অপপ্রচার এবং বিভিন্ন গুজব। গুজবে কান দেবেন না। পরিবারের সঙ্গে পর্যাপ্ত সময় কাটান। সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করুন, রুটিন বিষয়গুলো, যেমন ঘুম, ঠিক সময়ে খাবার, বাড়িতে হালকা ব্যায়াম ইত্যাদি বন্ধ করবেন না। সুষম আর নিরাপদ খাদ্য গ্রহণ করুন। পর্যাপ্ত পানি পান করুন। সময়মতো ঘুমান, হালকা ব্যায়াম করুন এবং অবশ্যই নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। ধূমপান, মদ্যপান বা নেশা এড়িয়ে চলুন।’

মানুষের পাশে দাঁড়ান
বাংলাদেশের মতো দেশে করোনার প্রভাব সবচেয়ে খারাপভাবে পড়ে দরিদ্র মানুষের ওপর। যেসব মানুষ দিন এনে দিন খায়, তাদের বেশি কষ্ট হবে। এটি শুরু হয়ে গেছে। ঢাকার রাস্তা ফাঁকা হয়ে গেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষুদ্র ও ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের ভয়াবহ দুর্দিন শুরু হয়েছে। অধিকাংশ বাসা থেকে কাজের মানুষ ও দুধ বিক্রেতাকে বিদায় করে দেওয়া হয়েছে। এসব দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানোও একটা বড় কর্তব্য হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। অনেকের দরিদ্র আত্মীয়স্বজন রয়েছে। সাধ্যমতো তাদের সহায়তা করার অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁরা। অনেকে অপ্রয়োজনীয় খাদ্য, স্যানিটাইজার, সাবানসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মজুত করেছেন, তাঁরা এর কিছু কিছু এসব দরিদ্র মানুষের মধ্যে বিতরণ করতে পারেন।

খারাপ সংবাদ কম দেখুন
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘনঘন খারাপ সংবাদ বা নেতিবাচক সংবাদ এ সময় না দেখার পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ, এগুলো মনের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করে। গণমাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করোনা সংক্রমণসংক্রান্ত নেতিবাচক সংবাদ এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মন উৎফুল্ল থাকে—এমন ধরনের অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।

মাহজাবীন হক বলেন, এ সময় নেতিবাচক সংবাদ যত কম দেখা যায় তত ভালো। কারণ এটি দেখে রোগ থেকে মুক্ত থাকতে পারবে না, উল্টো মানসিক অস্থিরতা তৈরি হবে। এটি শরীরের জন্য মারাত্মক খারাপ। ফলে মন ভালো থাকে—এমন সবকিছু দেখা। তবে সব সময় ইউটিউব ও টিভি না দেখা ভালো। বরং এ সময় পরিবারের সঙ্গে গল্প করে সময় কাটান। শিশুদের সময় দেন।

অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ নিজের ওপর আস্থা রাখতে পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘অতীতে বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলায় আপনার দক্ষতা আর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগান। আত্মপ্রত্যয়ী থাকুন; এতে আপনার মানসিক চাপ অনেকাংশে লাঘব হবে।’

সৃজনশীল কাজে মন দেন
একসময় হয়তো কবিতা লিখতেন, হয়তো আপনার কোনো ছোটগল্প কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালপত্রিকায় ছাপাও হয়েছে। এই দীর্ঘ অবসরে আবার চেষ্টা করে দেখতে পারেন।

যাঁরা আঁকাআঁকি পছন্দ করেন, তাঁরা চেষ্টা করে দেখতে পারেন চিত্রকর্মের। গবেষকেরা গবেষণার পুরোনো হিসাব–নিকাশগুলো মিলিয়ে দেখতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রে অনলাইনে শিশুদের আঁকাআঁকির ক্লাস খুলেছেন একজন। সেটি থেকে অনেকে শিখছেনও। ভালো কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। সৃজনশীল কিছু করতে পারলে দেখবেন মনে প্রশান্তি আসছে।

বন্ধুদের খোঁজ নিন
আপনার বিরুদ্ধে হয়তো সবচেয়ে বড় অভিযোগ, বন্ধুদের খোঁজ নেন না। কালেভদ্রে হয়তো ফোনও করেন না। এখন অনেক সময় হাতে। পুরোনো বন্ধুদের খোঁজ নিন। ফোনে গল্প করুন। প্রয়োজনে ভিডিও কনফারেন্স করে পুরোনো বন্ধুরা অনলাইনে জমাট আড্ডা দিতে পারেন। এটি বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করতে কাজে দেবে।

সিনেমা দেখা, গান শোনা, বই পড়া
বাংলাদেশেও অ্যাপভিত্তিক ভিডিও স্ট্রিমিং জনপ্রিয় হচ্ছে। অনেকেই নেটফ্লিক্সসহ বিভিন্ন ধরনের ভিডিও স্ট্রিমিং সার্বস্ক্রাইপ করেছেন। আবার বিনা মূল্যে ইন্টারনেট ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বহু নামকরা সিনেমা। অবসরের এই সময় কাটাতে সিনেমা দেখতে পারেন। শুনতে পারেন পুরোনো দিনের গান বা সম্প্রতি প্রকাশিত গান।

প্রিয় লেখকের তালিকা থেকে পড়া শুরু করতে পারেন বই। বাংলাদেশে সবে শেষ হয়েছে বইমেলা। অনেকেই বই কিনেছেন। কিন্তু এখনো পড়া শুরু করতে পারেননি। এটাই ভালো সময় বই পড়ার।

নিজের কাছে ফেরা
হঠাৎ কোনো মধ্যরাতে ঘুম ভেঙে গেলে বা সন্ধ্যায় বাসায় ফিরতে ফিরতে ব্যস্ত ট্রাফিক সিগনালের মোড়ে অথবা নেহাত কাজের ফাঁকে মনে পড়ে যায়, কী হতে চেয়েছিলেন আর কী হলেন। এই যে নিজের কাছে নিজের প্রশ্নগুলোর উত্তর ছাড়াই হয়তো দিনগুলো চলে যাচ্ছে। এই নিরন্তর ঘরে থাকার সময় নিজের কাছে ফিরুন। নিজের সঙ্গে কথা বলুন। খুব ধীরে নিজের হৃদয়ের কাছে কান পাতুন, কী কথা বাকি আছে বলা? নিজের কাছে নিজের ফেরার এটাই হয়তো সবচেয়ে ভালো সময়।

 

[https://www.prothomalo.com/life-style/article/1646616/%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%87-%E0%A6%AF%E0%A7%87-%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%AC%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A3-%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%AF%E0%A7%8B%E0%A6%97]

সূত্রঃ https://www.prothomalo.com/international/article/1646273/%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%A8%E0%A6%BE-%E0%A6%AE%E0%A7%8B%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A7%9F-%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B0-%E0%A6%B9%E0%A6%82%E0%A6%95%E0%A6%82-%E0%A6%A6%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%BF%E0%A6%A3-%E0%A6%95%E0%A7%8B%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%BE-%E0%A6%AF%E0%A7%87

এই প্রেক্ষাপটে আমরা যা যা শিখলাম!

শিক্ষা–১: বিষয়টি গুরুত্ব দিন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নিনঃ আমরা “দেখি না কি হয়, দেখি না কি হয়” করে সফল ভাবে এখন পর্যন্ত সময় পার করে চলেছি। ইনশাল্লাহ আগামী দিনগুলোও এভাবেই পার হয়ে যাবে।

শিক্ষা–২: পরীক্ষাগুলো ব্যাপক ও সাশ্রয়ী করুনঃ আমরা মাত্র একটা জায়গায় পরীক্ষা সীমাবদ্ধ করে জ্ঞানী মানুষের পরিচয় দিয়েছি। কারও উপসর্গ আছে শুনলেই আমরা পরীক্ষা করা থেকে পিছিয়ে গিয়েছি। পরে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে দায় আগের অনেক ঘটনার মত অন্যের উপরে চাপিয়ে দিয়ে পার পাওয়া গেছে।

শিক্ষা–৩: শনাক্ত ও পৃথক করুনঃ আমরা শনাক্তকৃত লোকদের পৃথক না করে তাদের এলাকায় এলাকায় পাঠিয়ে দিলাম যাতে তাঁরা দীর্ঘদিনের অদেখা আত্মীয়-স্বজনদের সাথে ভালো করে দেখা সাক্ষাত করতে পারেন। ফলটা ভালো হয়েছে। এলাকার অর্থনীতি চাঙা হয়েছে, বিয়ে-শাদী, আড্ডাবাজি বেড়েছে।

শিক্ষা–৪: সামাজিক মেলামেশা বন্ধ রাখুনঃ সামাজিক মেলামেশা কমলে সামাজিক বন্ধন ধ্বংস হতে পারে বিধায় আমাদের প্রবাসীরা সামাজিক বন্ধন বাড়াবার উদ্যোগ নিয়েছেন। সেটা অনেকেই সমালোচনার বিষয় করেছেন, যা অনভিপ্রেত।

শিক্ষা–৫: জনগণকে ভালোভাবে অবহিত করুন এবং পাশে থাকুনঃ জনগণকে বলা হয়েছিল জন্ম বার্ষিকী পালন করতে। কিন্তু হুট করে করোনা চলে আসায় ৭০০ টন আতশবাতি পোড়ানোয় দায় কার যে হবে, সে চিন্তায় শুরু থেকেই সবার গা গুলিয়ে যায়, মাথাও ঠিকভাবে কাজ করে নাই। তাই জনগণকে অবহিত করার জন্য এক আপাকে দায়িত্ব দিয়ে আতশবাজি ও পটকাবাজি এস্তেমালে সবাই ব্যস্ত সময় কাটিয়েছি।

শিক্ষা–৬: ব্যক্তিগত জীবনাচরণেও নজর দিতে হবেঃ ব্যক্তিগত আচরনে আমরা দল্বলে ঘুরতে পছন্দ করি। ঘাড়ের উপরে দশজনের শ্বাসই যদি না পড়ল, তাহলে কিসের জনপ্রিয় নেতা বা নেত্রী হলাম? সেই চিন্তা থেকে জনসমাগম এড়ানো যাচ্ছে না, স্যরি।

করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) vs হোম কোয়ারেন্টাইন

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) ঠেকাতে করোনা আক্রান্ত দেশগুলো থেকে ফিরলে ‘হোম কোয়ারেন্টাইনে’ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, যারা দেশে ফিরছেন তাদের এ বিষয়ে কোনো স্পষ্ট ধারণা নেই। তাদের স্পষ্ট করে কিছু জানানোও হয়নি। ফলে করোনাভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি বাড়ছে তাদের মাধ্যমে।
আপনি কি হোম-কোয়ারেন্টিনে থাকছেন? টেলিফোনে এই প্রশ্নে তিনি যেন আকাশ থেকে পড়লেন। কথায় কথায় বেরুলো হোম-কোয়ারেন্টিন কী তা নিয়ে পরিষ্কার কোনো ধারণাই তার নেই। আর দশটা মানুষের মতই চলাফেরা করছেন, বাইরে যাচ্ছেন। সপ্তাহখানেক আগে ওমরাহ করে দেশে ফিরেছেন ঢাকার পাশের একটি জেলার এক বাসিন্দা।
হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা তিনি বলেন, “ওইভাবে আসলে কোথাও আমাকে ডিরেকশন দেয়া হয়নি।” কিভাবে, কোথায় থাকতে হবে, না থাকলে কী হবে সে বিষয়ে তাকে তেমন কিছু জানানো হয়নি বলেই তিনি এ নিয়ে ভাবছেন না।
মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশ থেকে দুই সপ্তাহ আগে ফিরেছেন এক প্রবাসী শ্রমিক। তার সাথে যখন কথা হচ্ছিল তখন স্থানীয় একটি বাজারে ছিলেন তিনি। তিনি জানান, সপ্তাহ খানেক ধরে বাড়ি নির্মাণের কাজ করছেন তিনি। ইট, বালুর মতো নির্মাণ সামগ্রী তিনি মিস্ত্রির সাথে গিয়ে নিজেই কিনেছেন। হোম-কোয়ারেন্টিন সম্পর্কে তার যে কোনো ধারণা রয়েছে, বোঝা গেল না।
৬ মার্চ প্রতিবেশী একটি দেশ থেকে বন্ধুদের সাথে স্থলপথে দেশে ফিরেছেন এক শিক্ষার্থী। হোম কোয়ারেন্টিনের নির্দেশনা মেনে চলছেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে মাত্র এ বিষয়ে জেনেছেন তিনি। ফলে দেশের বাইরে থেকে ফিরলেও সে নির্দেশনা মেনে চলতে পারেননি।

তিনি বলেন, “এখন টিভিতে দেখি যে বাইরে থেকে আসলে ১৪ দিন ঘরে থাকতে হবে। এর আগে জানতাম না।”
যে তিনজন বিদেশ ফেরত মানুষের সাথে বিবিসির কথা হয়েছে, তাদের কেউই বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে থাকছেন না। তাদের দুজনের হোম-কোয়ারেন্টিন সম্পর্কে কার্যত কোনো ধারণা নেই। তাদের অনুরোধে এবং তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে নাম দেওয়া হলোনা।
বাংলাদেশে সরকারিভাবে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, বিদেশ থেকে ফেরা মানুষদের ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। এই নির্দেশ না মানলে জেল-জরিমানার কথাও বলা হয়েছে।
রবিবার রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে হোম কোয়ারেন্টিনের নির্দেশনা যে অনেক ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না সে বিষয়টি তুলে ধরেন জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
তিনি বলেন, অনেকেই যেহেতু হোম কোয়ারেন্টাইন সঠিকভাবে মেনে চলছেন না তাই বিদেশ থেকে কেউ আসলে তাকে আগে হজ ক্যাম্পে নেয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পাঁচজনের মধ্যে চার জনই বিদেশ থেকে আসা। এমন অবস্থায়, চীনের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্ত দেশ ইটালি থেকে গত দুই দিনেই বাংলাদেশে ফিরেছে সাড়ে তিনশর বেশি মানুষ। এদের মধ্যে ১৪২ জনকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।
বাড়িতে তাদের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা কতটা সম্ভব হচ্ছে এমন প্রশ্নের উত্তরে আইইডিসিআর এর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা নেয়া হচ্ছে।

“এবার হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হচ্ছে প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে। যাতে তারা জানতে পারেন যে কে কোথায় গেল যাতে করে ফলোআপ করা যায়।”
এখন থেকে যাদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে তারা বাড়িতে থাকলেও সরকারি নজরদারিতে থাকবেন বলে তিনি বলেন।
বাংলাদেশে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২৩১৪ জন মানুষকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে কতজন বাস্তবে কোয়ারেন্টাইনে থাকছেন তা নিয়ে সন্দেহের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। সূত্র : বিবিসি বাংলা।

মার্কিন মানবপাচার প্রতিবেদন নিয়ে ঢাকায় অস্বস্তি

[ সূত্রঃ mzamin.com/article.php?mzamin=210240&cat=2 ]

 

মার্কিন মানবপাচার রিপোর্ট নিয়ে চরম অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যদিয়ে যাচ্ছে ঢাকা। সরকারের তরফে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে পরিস্থিতির উন্নতিকরণ এবং এটি দৃশ্যমান করার। কিন্তু সময়ের সঙ্গে তাল মিলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। বাৎসরিক রুটিন মতে, আগামী  জুনে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট দেশওয়ারি বৈশ্বিক ওই রিপোর্ট প্রকাশ করতে যাচ্ছে। সর্বশেষ (২০১৯) রিপোর্টে মানবপাচারে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল টায়ার-২ অর্থাৎ চরম ঝুঁকিতে। সেই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের তরফে পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতির তাগিদ দিয়ে বলা হয়েছিল, অবস্থার পরিবর্তন না হলে বাংলাদেশ টায়ার-৩-এ নেমে যাবে। আর অবনমন হলে প্রথম আঘাত আসবে মার্কিন সহায়তায়। যে সহায়তা বিশেষতঃ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রশিক্ষণের জন্য রবাদ্দ।

রোহিঙ্গা ছাড়া মার্কিন দাতব্য সংস্থা ইউএসএআইডির অন্য সহায়তাও প্রভাব পড়বে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কমকর্তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মানবপাচার বিষয়ক বৈশ্বিক রিপোর্টকে সামনে রেখে বাংলাদেশ সরকার তার মূল্যায়ন রিপোর্ট জমা দেবে। পাশাপাশি এ নিয়ে ওয়াশিংটন নিজস্ব অনুসন্ধান চালাবে। দু’টো মিলে স্টেট ডিপার্টমেন্টের রিপোর্টে বাংলাদেশের অবস্থা এবং অবস্থান নির্ধারিত হবে। বিগত রিপোর্টের প্রসঙ্গ টেনে এক কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সুপারিশ এবং বাংলাদেশ তার নিজস্ব তাগিদে মানবপাচার ঠেকাতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এ সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, জড়িত এজেন্টদের পাকড়াওয়ে অভিযান এবং জনসচেতনতায় ঢাকা ব্যাপক ভিত্তিক পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু এসব পদক্ষেপের অনেক কিছু পুরোপুরি দৃশ্যমান হতে আরও কিছু সময় লাগবে।

মানবপাচার সংক্রান্ত মামলা দ্রুত বিচারে দেশের প্রায় সব বিভাগীয় শহরে ট্রাইব্যুনাল স্থাপনসহ প্রশাসনিক অ্যাকশনগুলো ফাংশনিং বা কার্যকর হতে আরও ক’মাস লেগে যাবে। ময়মনসিংহ ছাড়া সব বিভাগীয় শহরে ট্রাইব্যুনাল হচ্ছে। এরইমধ্যে অনুমোদনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেছে। মার্চে বিচারকাজ শুরু করা যাবে। যুক্তরাষ্ট্র চাইলে বাংলাদেশকে সেই সময়টুকু দিতে পারে এমন মন্তব্য করে এক কর্মকর্তা বলেন, দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগে বিষয়টি তোলা হচ্ছে।

বাংলাদেশের উদ্যোগ বা পদক্ষেপ সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র সরকার কমবেশি অবহিত। আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শেষ করে সব পদক্ষেপ দৃশ্যমান বা কার্যকর হতে যে সময় লাগছে সেটিই এখন আমরা যুক্তরাষ্ট্রের বিবেচনায় রাখছি। ঢাকার সদিচ্ছা রয়েছে পরিস্থিতির উন্নয়নে, এতে ব্যক্তি, প্রশাসন বা সরকারের কোন গাফলতি নেই দাবি করে ওই কর্মকর্তা বলেন, ওয়াশিংটন চাইলে ঢাকাকে আরও এক বছর পর্যবেক্ষণে রাখতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অনেক কিছুই ‘রাজনীতি’র সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায় উল্লেখ করে অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, স্পর্শকাতর মানবপাচার ইস্যুতে নেয়া স্টেট ডিপার্টমেন্টের সিদ্ধান্ত বা রিপোর্টে রাজনৈতিক বিবেচনা থাকবে না বলেই মনে করে ঢাকা। উল্লেখ্য, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট মানবপাচার রিপোর্টকে এতটাই গুরুত্ব দেয় যে রিপোর্ট প্রকাশ অনুষ্ঠানে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রী উপস্থিত থাকেন এবং বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়ে তিনি তার মূল্যায়ন তুলে ধরেন।

একটি বিসিএস জাতি

আমরা একটি বিসিএস জাতি।

ভারত চাঁদে মহাকাশযান পাঠায়।
আমরা সেই চন্দ্রযানের উৎক্ষেপণের তারিখ, খরচ, ওজন ইত্যাদি সব বিষয় মুখস্থ করে এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা দিয়ে ক্যাডার হই।

স্বপ্নের সীমা শেষ।

এরপরে সুন্দরী বউ, ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ুয়া সন্তান, সরকারি লোনে বাড়ি-গাড়ি — ব্যস হয়ে গেল। এর চেয়ে বেশি আর কি চাইবার আছে?